খেজুরের যত পুষ্টিগুণ
রমজানে প্রতি বছরই আমরা খেজুর খাই । বিশেষ করে ইফতারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ খেজুর । কিন্তু সারা বছরই আসলে খেজুর খাওয়া খুবই প্রয়োজন । কেন ? নিচের তথ্যগুলো আপনাকে খেজুরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিশদ ধারণা দেবে ।
যে বিষয় গুলো আলোচনা করা হয়েছে
- পুষ্টিগুণে ভরপুরঃ
- ওজন কম রাখাঃ
- শক্তির উৎসঃ
- মানসিক চাপ কমায়ঃ
- আয়রনের জোগান দেয়ঃ
- কাশি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ
পুষ্টিগুণে ভরপুরঃ
প্রচুর ভিটামিন, আঁশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ খেজুর একজন সুস্থ মানুষের শরীরে আয়রনের চাহিদার প্রায় ১১ ভাগই পূরণ করে। প্রতিদিন সকালে ৩-৪ টি খেজুর খেলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। বিশেষত যারা কোনো ধরণের পেটের রোগে ভুগছেন তাদের জন্য তো এই ফলটি বিশেষ উপকারী ।
ওজন কম রাখাঃ
যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনি মোটা হয়ে যাওয়ার হাত থেকেও রক্ষা পান । তাই খেজুরকে খাদ্যতালিকায় রাখার কথা বলেন পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা ।বিশেষত যাদের ডায়াবেটিস আছে , তাদেরকে ওজন কম রাখতে বলেন ডাক্তাররা, সেক্ষেত্রে শুকনো খেজুর দারুণ কার্যকর , তবে নির্দেশিত পরিমাণ মতো খেতে হবে ।
শক্তির উৎসঃ
খেজুর রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। খেজুরকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। চারটি খেজুর বা ৩০গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। প্রচুর ভিটামিন বি, থাকার কারণে মস্তিষ্কের কার্যক্রম বৃদ্ধি করে ।
মানসিক চাপ কমায়ঃ
মানসিক চাপ ও হতাশার কারণে মাথা ব্যথা হলে তা দূর করবে খেজুর, কেন জানেন ? খেজুরে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, যা স্ট্রেস দূর করতে সহায়ক। এছাড়া খেজুরে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড ও ট্রিপটোফেন, যা সিরোটোনিন হরমোন তৈরিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই মিষ্টি ফল মনে আনন্দের অনুভূতি ছড়িয়ে দেয় ।
আয়রনের জোগান দেয়ঃ
এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতায় যারা ভুগছেন, তারা প্রতিদিন খেজুর খেতে পারেন। একজন সুস্থ মানুষের শরীরে যতটুকু আয়রন প্রয়োজন, তার প্রায় ১১ ভাগ পূরণ করে খেজুর। তাছাড়া ভিটামিন ‘কে’-তে ভরপুর খেজুর। ভিটামিন ‘কে’ হাড়কে মজবুত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে ।
কাশি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ
কাশির সিরাপ না খেয়ে বরং যাদের খুসখুসে কাশি হয় তারা ২০-২৫ গ্রাম খেজুর, ২ কাপ গরম জলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ওই খেজুর চটকে নিয়ে সরবতের মতো করে খেলে খুসখুসে কাশি থেকে ১৫ দিনের মধ্যে উপকার পাবেন। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় রাতে পানিতে খেজুর ভিজিয়ে রাখুন। পর দিন সকালে খেজুর ভেজানো পানি পান করুন।
তবে শুকনো খেজুর বা খোরমা কিছুদিন রেখে খাওয়া যায়। আর, তাজা খেজুর সরাসরি ফ্রিজে রাখা ভালো এবং কয়েকদিনের মধ্যেই তা খেয়ে ফেলতে হবে । খেয়াল রাখতে হবে যেন সংরক্ষিত খেজুরে ফাঙ্গাস না পড়ে ।