গর্ভবতী মা

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমূহ

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমূহ

যে সকল মহিলারা প্রথম বার মা হতে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমূহ নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকেন। সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পাড়ে কোন কোন সময় একটু দেরিও হতে পাড়ে।

যে বিষয় গুলো আলোচনা করা হয়েছে

  1. গর্ভাবস্থায় যেসব লক্ষণ দেখা যেতে পাড়ে
  2. পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া
  3. মাথা ঘোরা, বমি
  4. খাবারে অনিহা বা অরুচি
  5. মুড সুইং বা মেজাজ ওঠা নামা
  6. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
  7. শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগা
  8. শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি
  9. গর্ভধারণ অবস্থায় সাধারণ প্রশ্ন
  10. গর্ভধারণ অবস্থায় কি পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হয় ?
  11. গর্ভধারণ এর কত দিন পর পজিটিভ বোঝা যায় ?

গর্ভাবস্থায় যেসব লক্ষণ দেখা যেতে পাড়ে

ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার জরায়ুতে পৌছাতে প্রায় ৬ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, গর্ভধারণের ৬ষ্ট সপ্তাহ থেকে ৮ম সপ্তাহ পযন্ত সময় লাগে গর্ভধারণের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেতে। ৬০ ভাগ মহিলাদের ৬ষ্ট সপ্তাহেই লক্ষণ সমূহ প্রকাশ পেয়ে থাকে। এবং ৮ম সপ্তাহে ৯০ ভাগ মহিলাদের লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায়। তবে আপনার যদি নিয়মিত মাসিক না হয় কিংবা আপনি মাসিকের সময় খেয়াল না রাখতে পারেন তাহলে কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ আপনার মাঝে প্রাকাশ পেলে বুঝতে পারেন আপনি গর্ভবতী।

১. পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া

প্রতিমাসের নিদিষ্ট সময় ( ২৮ দিন) পর পর মেয়েদের মাসিক বা ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। যদি নিদিষ্ট সময় পর ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড না হয় তবে সাধারণ ভাবে বুঝে নিবেন আপনি গর্ভবতী। কিন্তু, অনেক সময় পিরিয়ড বন্ধ হলেই আপনি গর্ভবতী এমন টা নয়। অধিক দুঃচিন্তা, সঠিক সময় খাবার না খাওয়া, ঠিক মত না ঘুমানো, শরীর দুর্বল থাকলে, ইত্যাদি অনেক কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। তাই পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হলে প্রেগনেন্সি কিট দিয়ে পরিক্ষা করে নেয়া উচিত। এতে করে আপনি সঠিক ভাবে যাবে জানতে পারবেন আপনি আসলেই গর্ভবতী হয়েছেন কিনা।

২. মাথা ঘোরা, বমি

গর্ভধারণের প্রথম পর্যায়ে ঘন ঘন মাথা ঘোরা, বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে। এই সময় এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যপার। ঘন ঘন বমি, মাথা ঘোরা হলে অনেকেই ধরে নেন গর্ভধারণে কনফার্ম হয়েছে। তবে শরীর দুর্বল অন্যান্য সমস্যার কারণেও মাথা ঘুরতে পারে বা বমি হতে পারে।

৩. খাবারে অনিহা বা অরুচি

আপনার গর্ভধারণের পর খাবারে অরুচি বা অনিহা থাকতেই পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক। এই সময় আপনি কিছু কিছু খাবারের গন্ধ আপনার কাছে অসয্যনীয় হতে পারে। এই রকম গন্ধপ্রবন হওয়ার পেছনে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যায় না। শরীরে এস্ট্রোজেন হরমোন বৃদ্ধির কারণে এমন হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হয়।

৪. মুড সুইং বা মেজাজ ওঠা নামা

কোন কারণ ছাড়ায় দ্রুত মেজাজ এর নাটকিও পরিবর্তন কেই মুড সুইং বলে। গর্ভধারণ অবস্থায় এরকম হওয়া টা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। আংশিক হরমোনের পরিবর্তন এর কারণেও হয়ে থাকে হঠাৎ মেজাজ ওঠা নামা বা মুড সুইং। গর্ভা অবস্থায় প্রথম দিকে এরকম মুড সুইং হতে পারে। অনেক সময় মা প্রথমবার হওয়ায় উচ্চমাত্রায় আবেগ প্রবণ হতে পারেন। যা ভাল এবং খারাপ দুই রকমি হতে পারে। তবে আপনি যদি বেশি মাত্রায় দুঃচিন্তা বা নিরাশ বোধ করেন, কোন কিছুতেই মন নিবেশ করতে না পারেন। তাহলে অভিজ্ঞ ডক্টর এর সরনা-পন্ন হতে পারেন।

৫. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া

এই সময়ে হরমোনের কারণে দেহে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি ঘটে। হরমোনের পরিবর্তনের কারণে আপনার দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম গুলো দ্রুত হয় যার কারণে আপনার দেহে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি ঘটে। এই কারণেই আপনার মূত্র থলি দ্রুত পূর্ণ হয়ে যায়। তাই আপনার ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই অবস্থায় আপনি প্রস্রাব আটকে রাখতে পারবেন না, এমনি এটা কখনো করবেন ও না। ভূণের বৃদ্ধির সাথে সাথে জরায়ুর আকার বেড়ে যায়। গর্ভধারণের পর যত সময় যাবে ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়ার প্রবণতা বাড়তেই থাকবে।

৬. শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগা

গর্ভ ধারণের প্রথম অবস্থা থেকেই শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগতে পারে। শরীরে হরমোনের পরিবর্তন এর কারণেই শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগে। রাত্রে ঘন ঘন প্রস্রাব করার কারণে ঘুম থেকে বার বার উঠতে হয়। তাই ঠিক মত ঘুম না হওয়ার কারণে শীরর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগে।

 

৭. শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি

গর্ভাবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি থাকে । আপনি যদি আপনার শীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করেন। আর যদি দেখেন টানা ১৮ দিন শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি থাকে তাহলে বুঝবেন আপনার প্রেগনেন্সি পজেটিভ।

গর্ভধারণ অবস্থায় সাধারণ প্রশ্ন

. গর্ভধারণ অবস্থায় কি পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হয় ?

উত্তরঃ গর্ভধারণ অবস্থায় পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হয়। আর এটা সন্তান জন্ম নেবার পর পর্যন্ত হয়ে থাকে। তারপর টানা ১ মাস পর্যন্ত পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ৪০ দিন বা তার ও বেশি হয়ে থাকে।

. গর্ভধারণ এর কত দিন পর পজিটিভ বোঝা যায় ?

উত্তরঃ পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হবার পর থেকেই গর্ভধারণ হয়েছে কিনা তা প্রেগনেন্সি কিট এর মাধ্যমে বোঝা যায়। যদি পজিটিভ আসে তাহলে বুঝতে হবে ২ সপ্তাহের প্রেগন্যান্ট। কারণ প্রেগন্যান্ট হওয়ার ২ সপ্তাহ পর সঠিক ভাবে বোঝা যায়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *