স্যালাইন সংকট আর হবে না: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসায় স্যালাইন নিয়ে আর কোনো সংকটের মুখোমুখি হতে হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার।
তিনি বলেছেন, ডেঙ্গুরোগীর চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় আইভি ফ্লুইড স্যালাইন। এ স্যালাইন নিয়ে সাময়িক সমস্যা হয়েছিল। আমরা জরুরিভাবে ভারত থেকে তিন লাখ প্যাক স্যালাইন আমদানি করেছি। এরমধ্যে ৪৪ হাজার প্যাক স্যালাইন হাতে পেয়েছি। এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সারাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানি এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড বা ইডিসিএলের মাধ্যমে স্যালাইনের চাহিদা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডা. হাবিবুল আহসান বলেন, ভারত থেকে পর্যায়ক্রমে স্যালাইন দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সেগুলো সারাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এ মুহূর্তে আমাদের কোনো স্যালাইন সংকট হচ্ছে না।
এই তিন লাখের বাইরে আরো কিছু স্যালাইন আমদানির প্রক্রিয়া চলছে এবং সেগুলো অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ডেঙ্গুতে এ বছর মধ্যবয়সীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একইসঙ্গে শিশুদের ডেঙ্গু নিয়ে ভয় না পাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অধিদপ্তর বলছে, আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ২০-৫০ বছর বয়সীরা। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে আক্রান্তের হার ৮ শতাংশের মত।
তিনি বলেন, এ বছরে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল গত জুলাই, আগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে। এরমধ্যে জুলাইয়ে শনাক্ত ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন, মারা যান ২০৪ জন; আগস্টে শনাক্ত ৭১ হাজার ৯৭৬ জন, মারা যান ৩৪২ জন এবং সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত শনাক্ত ৬০ হাজার ৯০৯ জন, মারা গেছেন ৩০০ জন।
ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, এ বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৮৪ হাজার ৭১৭ জন। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু আউটব্রেক হয়েছিল। সে বছর মোট শনাক্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। কিন্তু এ বছর শেষ হওয়ার আগেই শনাক্তের সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় অনেক বেশি।
তিনি বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গুরোগী সবচেয়ে বেশি। ঢাকা সিটির বাইরে সারাদেশে আমাদের আটটি বিভাগীয় পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি রোগী চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে। ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী এসব জেলায় রোগী বেশি। চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম এবং লক্ষ্মীপুর জেলা এবং বরিশাল বিভাগের বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলায় বেশি আক্রান্ত পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগে ডেঙ্গু শনাক্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।
ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ পরিচালক বলেন, দেশের সব জেলা-উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে একই প্রটোকল ও গাইডলাইন অনুসরণ করে ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের সব চিকিৎসককে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।