প্রধান খবরফিটনেস

মানসিক চাপ জনিত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যোগাসন

মানসিক চাপ জনিত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যোগাসন, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে সৃষ্ট উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারে যোগাসন। এজন্য দৈনিক অন্তত ৪৫ মিনিট যোগাসন করার পরামর্শ দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব হাইপারটেনশন। পাশাপাশি দৈনিক গান শোনা, যোগ ব্যায়াম ও মননশীলতার চর্চা করতে পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে সৃষ্ট উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারে যোগাসন। এজন্য দৈনিক অন্তত ৪৫ মিনিট যোগাসন করার পরামর্শ দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব হাইপারটেনশন। পাশাপাশি দৈনিক গান শোনা, যোগ ব্যায়াম ও মননশীলতার চর্চা করতে পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এর সঙ্গে ধূমপান ছেড়ে দেওয়া ও কাঁচা লবণ খাওয়া কমিয়ে আনাসহ চিকিৎসকদের প্রতিষ্ঠিত পরামর্শ তো মেনে চলতেই হবে। হাইপারটেনশন নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধ অনুসারে, তুলনামূলক কম প্রচলিত এ উপায়গুলো নিয়ে যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের রক্তচাপ বিশেষজ্ঞ ও নিবন্ধের অন্যতম লেখক অধ্যাপক ব্রায়ান উইলিয়ামস বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এ পরামর্শগুলো শুনে মনে হয়, এগুলো ওষুধ খাওয়ার মতো এতটা কার্যকরী নয়। তবে এ উপায়গুলো হৃদযন্ত্রের ক্রিয়ায় দুশ্চিন্তার প্রভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ নিজের জন্য কতকিছুই করতে পারেন। আমাদের উচিত নিজের জন্য দৈনিক অন্তত আধাঘণ্টা সময় বের করা। এ সময়টাতে নিজেকে চাপমুক্ত করতে হবে ও বিশ্রাম নিতে হবে। গান শুনে, হাঁটাচলা করে, জিমে গিয়ে ও কয়েকটি ব্যায়াম করে নিজেকে চাপমুক্ত করা যায়।’

কী করলে রক্তচাপ কমবে ?

অকালমৃত্যুর শীর্ষ কারণ হলো উচ্চ রক্ত চাপ। উচ্চ রক্ত চাপের কারণে হৃদপিণ্ড ও রক্তনালীতে চাপ পড়ে। এর দীর্ঘ পরিণতি হিসেবে হৃদরোগ, হৃদযন্ত্রের বন্ধ হয়ে যাওয়া ও স্ট্রোক হতে পারে। সারা বিশ্বে একশ কোটিরও বেশি মানুষ বা প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে প্রতি চার জনে একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত।

১৮ দেশের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পরামর্শ

০১। নিয়মিত চাপ কমানোর কৌশলগুলো কাজে লাগাতে হবে। যোগাসন করা, গভীর শ্বাস নেওয়া, যোগ ব্যায়াম ও মননশীলতার চর্চা করতে হবে।

০২। কৃতজ্ঞতা বোধ তৈরির চর্চা করতে হবে। ইতিবাচক যে বিষয়গুলোর প্রতি আপনি কৃতজ্ঞ হতে পারবেন সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দিন এবং ভালো থাকার বোধ তৈরির জন্য দাতব্য কাজ করতে হবে।

০৩। সপ্তাহে তিনদিন অন্তত ২৫ মিনিটের জন্য কোনো প্রশান্তিকর গান শুনুন।

অধ্যাপক উইলিয়ামসের মতে, মানসিক চাপ ও হৃদপিন্ডের ওপর চাপ কমানোর ক্ষেত্রে দৈনিক কর্মযজ্ঞ থেকে মনযোগ সরিয়ে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ও সামষ্টিক প্রভাব রয়েছে।

এক্ষেত্রে আরও কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা যায়। যেমন, নিয়মিত কায়িক শ্রম করা ও পর্যাপ্ত ঘুমানো। নানাধরনের ফিটনেস গ্যাজেট ও অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতি পদক্ষেপ, ঘুম ও স্বাস্থ্যের উন্নতি পরিমাপ করা যায়।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একজন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক উইলিয়ামস বলেন, ‘শুধু ঘুমের পরিমাণ নয় ঘুমের মানও গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো মানুষকে অন্তত ৭ ঘণ্টা ভালোভাবে ঘুমাতে হবে। এতে কম ঘুম ও চাপমুক্ত না হওয়ার কারণে যে মানসিক চাপের সৃষ্টি হয় তা কমে।’

আরও কিছু পরামর্শ 

দৈনন্দিন খাবারে মাছ বা ওমেগা–৩ ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট রাখা যেতে পারে।

অন্ত্রের স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ। প্রোবায়োটিক ও প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।

অল্প পরিমাণে চা–কফি খাওয়া ঠিক আছে। তবে বেশি পরিমাণে এনার্জি ড্রিংক ও ক্যাফেইন গ্রহণে ক্ষতি হতে পারে।

লিকারিক টি বা যষ্ঠিমধুর গাছের পাতা থেকে তৈরি চা পানে সতর্ক থাকতে হবে। এতে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।

বিটরুট ও আনারের রস রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। কারণ এতে নাইট্রেট যৌগ থাকে। রক্তনালি প্রসারিত ও শিথিল করতে চিকিৎসকরা নাইট্রেট ব্যবহার করেন।

ঘরের বাইরে ব্যায়াম করতে হল, কোনো পার্ক বা ব্যস্ত নয় এমন রাস্তা বেছে নিতে হবে। কারণ ব্যস্ত জায়গায় বেশি পরিমাণে দূষিত বায়ু থাকে, যা আমাদের হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *