মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (হার্ট অ্যাটাক) হৃদ্স্বাস্থ্যের জন্য এক নীরব ঘাতক : অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার
প্রতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হৃদ্রোগ দিবস পালিত হয়।
২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য:
‘ ডোন্ট মিস এ বিট’।
এই দিবসে আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।
মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন কী?
মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, যা আমরা হার্ট অ্যাটাক নামে চিনি, এমন একটি অবস্থা যখন হঠাৎ করে হৃদ্পেশির কোনো অংশে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওই অংশ অক্সিজেনের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা নষ্ট হয়ে যায়।
একটি দ্রুত শনাক্ত ও চিকিৎসা-সাপেক্ষ জরুরি অবস্থা।
কারণ
সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো করোনারি ধমনীতে চর্বি, কোলেস্টেরল ও অন্যান্য উপাদান জমে “প্লাক” তৈরি হওয়া।
এই প্লাক ফেটে গেলে সেখানে রক্ত জমাট বাঁধে এবং হৃদয়ে রক্তপ্রবাহ থেমে যায়।
ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা
•উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরল রোগী
•ডায়াবেটিস আক্রান্ত
•ধূমপায়ী ও অতিরিক্ত মদ্যপানকারী
•স্থূলতা বা শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তি
•পরিবারে হৃদ্রোগের ইতিহাস থাকলে
প্রধান লক্ষণ
•বুকে তীব্র চাপ বা ব্যথা, যা বাহু, ঘাড় বা চোয়ালে ছড়াতে পারে
•শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত ঘাম
•বমিভাব, মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
সতর্ক সংকেতকে অবহেলা নয় — দ্রুত হাসপাতালে যান।
চিকিৎসা
দ্রুত চিকিৎসাই জীবন বাঁচায়।
ওষুধের মাধ্যমে রক্ত জমাট গলিয়ে ধমনী খুলে দেওয়া হয় বা
“অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি” ও “স্টেন্ট” বসিয়ে রক্তপ্রবাহ সচল করা হয়।
প্রতিরোধ: হৃদয়ের জন্য স্থান তৈরি করুন
বিশ্ব হৃদ্রোগ দিবসের স্পিরিট অনুযায়ী—
“নিজের এবং পরিবারের হৃদয়ের জন্য স্থান তৈরি করুন”
•প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম
•কম চর্বি ও লবণযুক্ত, স্বাস্থ্যকর খাবার
•ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন
•নিয়মিত রক্তচাপ, রক্তে চিনি ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা
•মানসিক চাপ কমিয়ে রাখা
•প্রযুক্তি ব্যবহার হোক স্বাস্থ্যরক্ষার সঙ্গী, বাধা নয়
বার্তা
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধযোগ্য। প্রযুক্তির অগ্রগতির যুগে সচেতন জীবনযাপন ও সময়মতো চিকিৎসাই পারে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে। চলুন, এই বিশ্ব হৃদ্রোগ দিবসে আমরা প্রতিজ্ঞা করি — হৃদয়ের জন্য স্থান তৈরি করব, নিজেদের ও প্রিয়জনদের জন্য একটি সুস্থ আগামী গড়ব।

অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার
অধ্যাপক (কার্ডিওলজি), হৃদরোগ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।
চেম্বার:
সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
১২/৩, নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ
(মৌচাক মোড়ের কাছে), ঢাকা।
হট লাইন:
০১৯২৭-৩৩৩-০০০,
০১৭১৫-০০৬-৭৬৮
সম্পাদনা: মো. কামরুল ইসলাম নয়ন।