চিকিৎসকের পরামর্শপ্রধান খবর

স্তন ক্যান্সার হওয়ার যাদের ঝুকি রয়েছে- অধ্যাপক ডা. মো. ইয়াকুব আলী

মহিলাদের মাঝে স্তন ক্যান্সারের প্রকোপই সব চেয়ে বেশি। প্রতি ৮-১০ জন মহিলায় একজনের এ রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে। ২৫ বছরের কম বয়সে এ রোগের সম্ভাবনা খুবই কম। স্তন ক্যান্সার হওয়ার যাদের ঝুকি রয়েছে…

০১। বয়স ৩৫ এর বেশি,

০২। কম বয়সে ঋতুবতী হওয়া এবং দেরীতে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া ।

০৩। স্তন ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে ।
০৪। ৩০ বছরের পরে প্রথম সন্তান লাভ বা নিঃসন্তান।

 ০৫। চর্বি জাতীয় খাদ্য বেশি বেশি খাওয়া এবং শাক-সবজি কম খাওয়া ।

০৬। শিশুকে বুকের দুধ যারা দেন না।
০৭। স্ত্রী হরমোন জাতীয় ঔষধ বেশি দিন ব্যবহার করা ।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্তনে চাকা বা গুটি দেখা দিলে বা ত্বক বা বোঁটায় পরিবর্তন, বগলে গুটি ইত্যাদি খেয়াল
রাখিতে হবে। রোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করিতে পারিলে এবং সঠিক ভাবে চিকিৎসা নিলে ভালো হওয়ার
সুযোগ শতকরা ৯০ ভাগ।

রোগ নির্ণয় ( এজন্য যা করিতে হবে):

১। প্রতি মাসে নিজের স্তন বিছানায় শুয়ে এবং আয়নার সামনে দাড়িয়ে স্তন পরীক্ষা করুন। স্তনে কোন চাকা
গোটা হওয়া,স্তন ফুলে যাওয়া,কোন অংশ ডোবা দেখা দেয়া, আকারে কোন বিকৃতি দেখা দেয়া, স্তনের বোটা
ভেতরের দিকে সেঁধিয়ে যাওয়া, ব্যাথা,বোঁটা থেকে অস্বাভাবিক নিঃসরন হওয়া। এসব উপসর্গ যদি থাকে তবে
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ।

২। আল্ট্রাসনোগ্রফি করানো ।
৩। ম্যামোগ্রাফী (স্তনের এক্সরে) করা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ।
৪ । এফ.এন.এ.সি পরীক্ষা। সিরিঞ্জের সুই দিয়ে পিন্ড থেকে রস নিয়ে অনুবিক্ষন যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা।
৫। বায়োপসি: পিন্ডটি পূর্ন বা আংশিক অপারেশন করে নিয়ে পরীক্ষা।

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ

১। শল্য চিকিৎসা-অর্থাৎ স্তন কেটে বাদ দেওয়া বা স্তনের টিউমার সহ আরও কিছু অংশবিশেষ কেটে ফেলে
দেওয়া।

২। রেডিওথেরাপী-বিশেষ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিকিরন রশ্নি দিয়ে ক্যান্সার কোষ মেরে ফেলা।

৩। কেমোথেরাপী ক্যান্সার বিধ্বংসী ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করা।
রিসেপ ও

৪। হরমোন থেরাপী-হরমোন রিস্পেক্টর পজেটিভ রোগীদের হরমোন থেরাপী দিয়ে ২০ বৎসর পর্যন্ত চিকিৎসা
করা যায়। যাহা টিউমার ছড়ানোতে বাধা দেয়।

৫। টারগেটেড থেরাপী- টারগেটেড থেরাপী হচ্ছে যখন কোন ঔষধ ক্যান্সার বৃদ্ধি এবং ছড়ানোর জন্য দায়ী
অনুর উপর কাজ করে এবং দায়ী অনুকে নিষ্ক্রিয় করে ক্যান্সার বৃদ্ধি ছড়ানো প্রতিহত করে যেমন:ট্রাসটুজুমাব।

৬। ইমিউনোথেরাপী-শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা উজ্জীবিত করে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নামই
ইমিউনোথেরাপী।

৭। একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসা। যেমন: সার্জারী+কেমোথেরাপী+রেডিওথেরাপী+
হরমোনথেরাপীর মাধ্যমের চিকিৎসা ।

চিকিৎসার ফলাফল :

পাঁচ বৎসর বেঁচে থাকা রোগীর শতকরা হিসাব (ধাপ অনুযায়ী)
স্তন ক্যান্সারের ধাপ (স্টেইজ) সমূহ
১ -বেঁচে থাকার হার

২-১০০%

৩-১০০%
৪-৯৩%
৫-92%
৬-22%
“ভয় কিংবা আতংক নয় হতে
স্তন ক্যান্সার হতে মুক্ত হাতে ক্যান্সার

নিয়ন্ত্রনে আশার বানীঃ

এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সবাই এগিয়ে আসুন”
“সূচনায় পড়লে ধরা, ক্যান্সার রোগ যায় যে সারা”
এক তৃতীয়াংশ (৩৩.৩৩%) ক্যান্সার প্রতিরোধ যোগ্য,এক তৃতীয়াংশ (৩৩.৩৩%) ক্যান্সার নিরাময় যোগ্য, এক
তৃতীয়াংশ (৩৩.৩৪%) ক্যান্সার পেলিয়েশন যোগ্য(ব্যাথা, কষ্ট কমানো এবং কোয়ালিটি অফ লাইফ ইমপ্রুভ করা সম্ভব।

অধ্যাপক ডা.মো. ইয়াকুব আলী,
রেডিয়েশন ও মেডিক্যাল অনকোলজিস্ট
অধ্যাপক ও প্রধান, অনকোলজি বিভাগ
এনাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, সাভার।
চেম্বার : রেডিয়েশন ও অনকোলজিসন্ট বিভাগ, আল-রাজি হাসপাতাল,(দ্বিতীয় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা।

মোবাইল : ০১৭৪৫৩৪৯৪১০, ০১৭৩২৪২৯৩৯০

সম্পাদনা: জ. ই বুলবুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *