স্বাস্থ্য সংবাদ

শূকর-থেকে-মানুষের দেহে হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট করেছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা

ওয়াশিংটন, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ চলতি সপ্তাহে একজন ৫৮ বছর বয়সী ব্যক্তির দেহে জেনেটিক্যালি মডিফাইড শূকরের হৃদপিন্ড (পিগ হার্ট)  ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় রোগী যার দেহে শূকরের হৃদপিন্ড প্রতিস্থাপন করা হলো। চিকিৎসা গবেষণার ক্রমবর্ধমান বিকাশের ক্ষেত্রে এটি সর্বশেষ মাইলফলক।

মানুষের মধ্যে পশুর অঙ্গ প্রতিস্থাপন করাকে বলা হয় জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন। এটি মানব অঙ্গ দানের দীর্ঘ সংকটের সমাধান দিতে পারে। ১,০০,০০০ এরও বেশি আমেরিকান বর্তমানে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষার তালিকায় রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, উভয় হার্টের প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞদল। প্রথম রোগী গত বছর তার ট্রান্সপ্লান্টের দুই মাস পরে ‘অপারেশনের আগে তার স্বাস্থ্যের খারাপ অবস্থা সহ অনেক জটিলতার কারণে’ মারা গিয়েছিল।
সর্বশেষ অপারেশনটি বুধবার হয়েছে, রোগী লরেন্স ফাসেট বিদ্যমান ভাস্কুলার রোগ এবং অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের জটিলতার কারণে দান করা মানব হৃদপি- গ্রহনের জন্য অযোগ্য ছিলেন।

দুই সন্তানের বাবা এবং নৌবাহিনীর সদস্য লরেন্স ফাসেট প্রায় হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন।
লরেন্স ফাসেটের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘আমার একমাত্র আসল আশা বাকি আছে শূকরের হৃদপিন্ড প্রতিস্থাপন, জেনোট্রান্সপ্লান্টের সাথে যাওয়া’। ‘অন্তত এখন আমার আশা আছে এবং আমার একটি সুযোগ আছে।

বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে ফ্যাসেট নিজে থেকে শ্বাস নিচ্ছিল এবং ‘সহায়ক যন্ত্রের কোনো সহায়তা ছাড়াই’ নতুন হৃদপি- ভালভাবে কাজ করছিল। ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে তিনি প্রচলিত এন্ট্রি-রিজেকশন ওষুধ সেবনের পাশাপাশি একটি নতুন অ্যান্টিবডি থেরাপি গ্রহণ করছিলেন যাতে তার শরীরের নতুন অঙ্গের ক্ষতি বা প্রত্যাখ্যান না হয়।

জেনোট্রান্সপ্ল্যান্ট চ্যালেঞ্জিং কারণ রোগীর ইমিউন সিস্টেম বাইরের অঙ্গ আক্রমণ করবে। বিজ্ঞানীরা জেনেটিক্যালি মডিফাইড শূকরের অঙ্গ ব্যবহার করে সমস্যাটি দূর করার চেষ্টা করছেন।
গত কয়েক বছরে, চিকিৎসকরা মস্তিষ্ক-ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের দেহে  জেনেটিক্যালি মডিফাইড শূকর থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন।

নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাঙ্গোন হাসপাতাল ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউট এই মাসে ঘোষণা করেছে যে, মৃত-মস্তিষ্ক রোগীর মধ্যে প্রতিস্থাপিত একটি শূকরের কিডনি রেকর্ড-প্রেকিং ৬১ দিন ধরে কাজ করেছে।
প্রারম্ভিক জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন গবেষণা প্রাইমেট থেকে অঙ্গ সংগ্রহের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। ১৯৮৪ সালে ‘বেবি ফা’ নামে পরিচিত একটি নবজাতকের মধ্যে একটি বেবুনের হার্ট প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু সে মাত্র ২০ দিন বেঁচে ছিল।

বর্তমান প্রচেষ্টাগুলো শূকরের উপর ফোকাস করে, যেগুলো মানুষের জন্য আদর্শ দাতা হিসাবে বিবেচিত হয় কারণ তাদের অঙ্গের আকার বড় এবং  দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *